সাইয়েদুল ইস্তেগফার বাংলা অর্থসহ উচ্চারণ

আরো পড়ুনঃ সুরা ফাতিহার ফজিলত ও আমল

ইস্তেগফার আরবী ভাষা বা শব্দ এর বাংলা অর্থ হলো ক্ষমা প্রার্থনা। স্বতত্র একটি এবাদত হলো ইস্তেগফার। মহান আল্লাহ পাক হলেন ক্ষমাকারী, ক্ষমাশীল, সর্বাধিক ক্ষমাকারী। মহান আল্লাহ পাকের নিকট অতি পছন্দিয় একটি ইবাদত তওবা বা ইস্তেগফার। মহানবী হযরত মুহাম্মাদ (সাঃ) অতি নিস্পাপ হওয়া স্বত্বেও তিনি প্রতিদিন তওবা বা ইস্তেগফার ৭০ হতে ১০০ বার পাঠ করতেন। 

ইসলাম ধর্মের ৫টি স্তম্ভের ২য় স্তম্ভ নামাজ, আর নামাজ আদায় বা পড়ার পর তিনবার ইস্তেগফার পড়া সুন্নত। এখান হতে বুঝা যায় যে, শুধু পাপ করার পরে ইস্তেগফার নয়, গুরুত্বপূর্ণ এবাদতের শেষেও ইস্তেগফার পড়া হয়। মহা পবিত্র গ্রন্থ আল কোরয়ানে উল্লেখ আছে হজের শেষে ইস্তেগফার পাঠ কর তারপর বেরিয়ে পড়ো তোমরা, মানুষ যেভাবে চলে যাচ্ছে এবং ক্ষমা চাও মহান আল্লাহ পাকের কাছে। নিশ্চয় মহান আল্লাহ পাক পরম দয়ালু, ক্ষমাশীল। সূরা বাকারা, আয়াত- ১৯৯।

আজকের পাঠক্রম- সাইয়েদুল ইস্তেগফার বাংলা অর্থসহ উচ্চারণ

  • ইস্তেগফার সম্পর্কে পবিত্র কোরয়ানে আছে
  • সাইয়েদুল ইস্তেগফার বাংলা অর্থসহ উচ্চারণ
  • সাইয়েদুল ইস্তেগফার বাংলা উচ্চারণ
  • সাইয়েদুল ইস্তেগফার বাংলা অর্থ
  • সাইয়েদুল ইস্তেগফার নিয়ম
  • ইস্তেগফার সম্পর্কে হাদিস
  • শেষকথা

ইস্তেগফার সম্পর্কে পবিত্র কোরয়ানে আছে

পবিত্র কোরআন ও সুন্নাতে বেশী বেশী করে তওবা বা ইস্তেগফার করার ব্যপারে তাগিদ দেওয়া হয়েছে। কেননা গোনামুক্ত জীবনের অন্যতম উপায় হচ্ছে তওবা বা ইস্তেগফার করা। মহান আল্লাহ পাক পবিত্র কোরয়ানে ঘোষণা করেছেন-

  • ** ''যে নিজের  গোনাহ বা অনিষ্ট করে, তারপর ক্ষমা প্রার্থনা করেন আল্লাহর কাছে, তখন সে মহান আল্লাহকে করুনাময় ও ক্ষমাশীল হিসাবে পায়''। (সূরা নিসা, আয়াত- ১১০)
  • ** ''নিশ্চয়ই জাহান্নামের নিম্নতম স্তরে মুনাফিকেরা অনস্থান করবে এবং কখনো সাহায্যকারী পাবে না তুমি তাদের। যারা সংশোধন হয় ও তওবা করা ব্যতিত''। (সূরা নিসা- আয়াত- ১৪৫-১৪৬)
  • ** ''হে মুমিনগণ! মহান আল্লাহ পাকের দিকে তোমরা প্রত্যাবর্তন করো, তোমরা জাতে হতে পারো সফলকাম''। (সূরা নুর, আয়াত- ৩১)
  • ** ''ক্ষমা প্রার্থনা করো তোমরা তমাদের রবের কাছে, তিনি নিশ্চয় মহাক্ষমাশীল''। (সূরা- নূহ, আয়াত- ১০)
  • ** ''অতঃপর প্রশাংসাসহ তোমার রবের পবিত্রতা বর্ণনা করো ও ক্ষমা প্রার্থনা করো তাঁর কাছে। (সূরা- নাসর, আয়াত- ৩)
  • ** ''মহান আল্লাহ পাক তাদের আজাব দেবেন না, তাদের মাঝে আপনি থাকা অবস্থায়, আর আজাব দেবেন না আল্লাহ পাক তাদের, যখন ইস্তেগফার করেন তারা''। (সূরা আনফাল, আয়াত- ৩৩)

সাইয়েদুল ইস্তেগফার বাংলা অর্থসহ উচ্চারণ

সাইয়েদুল ইস্তেগফার বাংলা উচ্চারণ

আল্লাহুম্মা আংতা রাব্বি লা- ইলাহা ইল্লা আংতা খালাক্কতানি ওয়া আনা আবাদুকা ওয়া আ-না আলা আহদিকা ওয়া ওয়াদিকা মাসতাতাতু আউজুবিকা মিন শাররি মা সানাতু আবুউলাকা বিনিমাতিকা আলাইয়্যা ওয়া আবুউলাকা বিজাম্বি ফাগফিরলি ফা- ইন্নাহু লা ইয়াগফিরুজ জুনুবা ইল্লা আংতা।

আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশের সর্ব প্রথম ও প্রাচীন মসজিদ

সাইয়েদুল ইস্তেগফার বাংলা অর্থ

হে আল্লাহ! তুমিই আমার প্রতিপালক। তুমি ছাড়া কোনো ইলাহ নেই। তুমিই আমাদের সৃস্টি করেছ। আমি তোমারই বান্দা, আমি যথাসাধ্য সঙ্গে তোমার প্রতিজ্ঞা ও অঙ্গীকারের উপর আছি। আমি আমার সব কৃতকর্মের কুফন থেকে তোমার কাছে আশ্রায় চাই। তুমি আমার প্রতি তোমার যে নেয়ামত দিয়েছো তা স্বীকার করছি। আর আমার কৃত গোনাহের কথাও স্বীকার করছি। তুমি আমাকে ক্ষমা করে দাও। কারণ তুমি ছাড়া কেউ গোনাহ ক্ষমা করতে পারবেনা। 

সাইয়েদুল ইস্তেগফার নিয়ম

প্রতিদিন সকাল ও সন্ধ্যায় এ ইস্তেগফার করা। ফজর ও মাগরিবের এই দুই নামাজ পড়ার পর এই ইস্তেগফার পড়তে ভূল না করা। কেননা হাদিস শরিফে এসেছে- যে ব্যক্তি এই ইস্তেগফার সকালে পড়ে আর সন্ধ্যায় আগে মারা যায় কিংবা সন্ধ্যায় পড়ে আর সকাল হওয়ার আগে মারা যায়, তবে সে জান্নাতে যাবে। (সহিহ- বুখারি)

ইস্তেগফার সম্পর্কে হাদিস

''রাসুলে পাক (সাঃ) বলেন- মুমিন বান্দার জন্য যে যত ইস্তেগফার করবে, সবার সমপরিমাণে নেকি লাভ করবে সে''। (সিয়ারে কাবির, তাবরানি)

১।

  • বাংলা উচ্চারণ- আস্তাগফিরুল্লাহা ওয়া আ-তুবু ইলাই-হি।
  • বাংলা অর্থ- আমি ক্ষমা প্রার্থনা করছি মহান আল্লাহর কাছে ও তাঁর দিকেই ফিরে আসছি।
  • নিয়ম- এই ইস্তেগফারটি প্রতিদিন ৭০ হতে ১০০ বার পড়া। রাসূলে পাক (সাঃ) প্রতিদিন প্রতিদিন ৭০ বার এর অধিক তওবা বা ইস্তেগফার করতেন। (বুখারি)
২।
  • বাংলা উচ্চারণ- রাব্বিগ ফিরলি ওয়া তুব আলাইয়্যা ইন্নাকা (আংতাত) তাওয়্যাবুর রাহিম।
  • বাংলা অর্থ- হে আমার প্রভু! আপনি আমাদের ক্ষমা করুন এবং আমার তওবা কবুল করুন। নিশ্চয়ই আপনি মহান তওবা কবুলকারী করুনাময়।
  • নিয়ম- রাসূলে পাক (সাঃ) মসজিদে বসে এক বৈঠকেই এই দোওয়া ১০০ বার পড়েছেন। (আবু দাউদ, মিশকত, তিরমিজি, ইবনে মাজাহ)
৩।
  • বাংলা উচ্চারণ- আস্তাগফিরুল্লা হাল্লাজি লা ইলাহা ইল্লা হুওয়াল হাইয়ুল কাইয়ুম ওয়া আতুবু ইলায়হি।
  • বাংলা অর্থ- আমি ওই আল্লাহর পাকের কাছে ক্ষমা চাই, যিনি ছাড়া প্রকৃতপক্ষে কোনো মাদুদ নেই, তিনি চিরঞ্জীব, চিরস্থায়ী এবং তাঁর কাছেই তওবা করে ফিরে আসি। 
  • নিয়ম- দিনের যে কোনো এবাদত- বন্দেগি তথা ক্ষমা প্রার্থনার সময় এভাবে তওবা বা ইস্তেগফার করা। হাদিস শরিফে এসেছে এভাবে তওবা বা ইস্তেগফার করলে মহান আল্লাহ পাক তাকে ক্ষমা করে দেবেন, যদিও সে যুদ্ধক্ষেত্র হতে পালায়নকারী হয়। (আবু দাউদ, মিশকত, তিরমিজি)

শেষকথা

আশাকরি আমরা আজকের এই তথ্যবহুল আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনাদের ''সাইয়েদুল ইস্তেগফার বাংলা অর্থসহ উচ্চারণ'' ও অনেক তথ্য শেয়ার করতে পেরেছি। মহান আল্লাহ পাক আমাদের সকল মুসলিমকে সাইয়েদুল ইস্তেগফার বা তওবার মাধ্যমে ক্ষমা প্রার্থনার তাওফিক দান করুন। আমিন। যদি আজকের আর্টিকেলটি ভালোলাগে এবং উপকারি মনে হয়, তাহলে অবশ্যই আপনাদের পরিচিতদের মাঝে শেয়ার করতে ভুলবেন না কিন্তু। আরো নতুন নতুন তথ্য জানার জন্য আমাদের সঙ্গে থাকুন। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url