সুরা ফাতিহার ফজিলত ও আমল

 আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশের সর্ব প্রথম ও প্রাচীন মসজিদ

মহাপবিত্র গ্রন্থ আল কোরয়ানের সর্বপ্রথম সূরা হলো "সূরা আল ফতিহা"। এই সূরাটি মক্কায় পূর্ণনাঙ্গভাবে সর্বপ্রথম নাজিল হয়। এই সূরাটির নাম করণ করা হয়েছে এর বিষয়বস্তু, মর্যাদা এবং বৈশিষ্ট্যর প্রতি লক্ষ রেখে। 

মহান আল্লাহর প্রশাংসা করার পদ্ধতি প্রথম তিনটি আয়াতের মধ্যে এবং পরবর্তী ৪ (চার) আয়াতে ইবাদতের তাওফিক, পরিপূর্ণ হিদায়ত এবং নেক বান্দাদের মধ্যে শামিল থাকার প্রার্থনা শিক্ষা দেওয়া হয়েছে। "সূরা আল ফাতিহার ফজিলত ও আমল নিম্নে সংক্ষেপে আলোচনা করা হলো- 

আজকের পাঠ্যক্রম- সুরা ফাতিহার ফজিলত ও আমল 

  • সুরা ফাতিহার ফজিলত ও আমল 
  • সূরা ''আল ফাতিহার'' বরকতময় নাম
  • সূরা ''ফাতিহার' প্রসিদ্ধ পাঁচ নাম
  • নবীকে দেওয়া আল্লাহর উপহার "সূরা ফাতিহা"
  • সূরা ''ফাতিহার'' গুরুত্ব ও তাৎপর্য
  • সূরা ''ফাতিহার ফজিলত
  • সূরা ''ফাতিহা'' শিক্ষা 
  • শেষকথা

সুরা ফাতিহার ফজিলত ও আমল

সূরা ''আল ফাতিহার বরকতময় নাম

মহাপবিত্র আল কোরয়ানের ১১৪ (একশত চৌদ্দ) টি সূরার মধ্যে সবচেয়ে বেশীবার সূরা "ফাতিহার" নাম রয়েছে। রহমত, বরকত এবং আমলের অনেক গুপ্ত রহস্য লুকিয়ে রয়েছে এই নাম সমূহের পেছনে। আর এই প্রত্যেক নামের সাথে যথার্থতা এবং সামঞ্জস্যতা বিদ্যমান। সূরা "ফাতিহার' ৫০০ (পাচশত) নাম উল্লেখ করেছেন আল্লামা জালালুদ্দীন সুয়ুতি (রহঃ) তার রচিত 'আল- ইতকান' গ্রন্থে।

এটা নিঃসন্দেহে সূরা "ফাতিহা'' শীর্ষ মর্যাদার পরিচায়ক। হযরত ইমাম বুখারি (রহঃ) সূরা "ফাতিহাকে' উম্মুল কিতাব হয়ার ব্যাখ্যায় বলেন যে, সূরা ''ফাতিহা'' দিয়ে মহাগ্রন্থ আল কোরয়ান লিখা শুরু হয়েছে। আবার এই সূরার মাধ্যমে নামাজের শুরু হউ এবং এটাই হলো পবিত্র কোরয়ান মজিদের সারসংক্ষেপ। আবু হুরায়রা (রাঃ) বর্ণনা করেন, রাসূলে পাক (সাঃ) বলেছেন, এটাই উম্মুল কোরয়ান, এটাই সাবয়া মাসানি ও এটাই কোরয়ানুল আজিম। (জামে তিরমিজি, হাদিস- ২৮৭৫, মুস্নাদে আহমদ- ২/৪৮৮)

সূরা ''ফাতিহার' প্রসিদ্ধ পাঁচ নাম

  • আল-কোরআন।
  • আল- ফুরকান।
  • আল- কিতাব।
  • আত- তানজিল।
  • সাবউল মাসানি।

নবীকে দেওয়া আল্লাহর উপহার "সূরা ফাতিহা"

মহান আল্লাহপাকের বিশেষ উপহার হিসাবে সূরা "ফাতিহা'' নবী কারিম (সাঃ) কে দিয়েছেন। হযরত ইবনে আব্বাস (রাঃ) বর্ণানা করেন, হযরত জিব্রাইল (আঃ) বিশ্বনবীর কাছে উপস্থিত ছিলেন, এমন সময় হঠাত উপরের দিকে একটি শুনতে পেয়ে তিনি নিজের মাথা তোমেল ও বলেন যে, এটি আসমানের একটি দরজা, যা আজই প্রথম খুলে দেওয়া হলো। আজকের দিন ছাড়া আর কখনো এই দরাজা খোনা হয়নি। তখন সেই দরজা দিয়ে গেরেসতা অবতরণ করলেন। তিনি বললেন, সে একজন ফেরেশতা।

আরো পড়ুনঃ বাংলাদেশের সবচেয়ে ছোট্ট প্রাচীন দু'টি মসজিদ

আজ ব্যতিত অন্য কোনদিন তিনি অবতরণ করেননি। এরপর ওই ফেরেশতারা তাঁকে সালাম করে বলেন যে, হে নবী আপনি গ্রহণ করুন ২ (দুই) টি নূরের সুসংবাদ। দেওয়া হয়েছে  আপনাকে এবং আপনার আগে আর কোন নবীকে দেওয়া হয়নি। দু'টি জিনিস হলো সূরা ''আল ফাতিহা'' এবং সূরা ''বাকারার'' শেষাংশ। এই ২ (দুই) টির যে কোন হরফ আপনি পাঠ করবেন তা আপনাকে দিয়ে দেওয়া হবে। অর্থাৎ এতে যে দোওয়ার বিষয় বস্তু আছে তা কবুল করা হবে। (সহিহ মুস্লিম, হাদিস- ১৭৫০)

সূরা ''ফাতিহার'' গুরুত্ব তাৎপর্য

এই সূরার গুরুত্ব ও তাৎপর্য অনেক বেশী। মহান আল্লাহ মুমিন বান্দার তিলওয়াত শোনেন এবং পঠিত আয়াতের জবাব দেন। হযরত উবাই ইবনে কাব (রাঃ) হতে বর্ণীত, রাসূলে পাক (সাঃ) বলেছেন, আল্লাহ তা'আলা তাওরাত ইঞ্জিলে উম্মুল কোরয়ানের মতো কিছু অবতীর্ণ করেননি, যা হলো সাবউল মাসানি। এটি আমার এবং আমার বান্দাদের মধ্যে ভাগাভাগি। আমার বান্দা যা চায়বে তা-ই তার। )জামে তিরমিজি, হাদিস- ৩১২৫)

সূরা ''ফাতিহার ফজিলত

সব নামাজে সূরা '' ফাতিহা'' পাঠ করা ওয়াজিব। এইটা ছাড়া নামাজ হয় না। মহা পবিত্র কোয়াওয়ানে এসেছে, হে নবী, আমি আপনাকে পঠিতব্য সাতটি আয়াত অর্থাৎ সূরা ''ফাতিহা'' ও মহান কোরয়ান দান করেছি। (সূরা হিজর, আয়াত- ৮৭)

আবু হুরায়রা (রাঃ) হতে বর্ণীত, নবী কারিম (সাঃ) বলেন, যখন ইমাম হবলে গাইরিল মাগদুবি আলাইহিম ওয়ালাদ দোয়াল্লিন, তখন তমরা বলবে, ''আমিন''। যার পড়া ফেরেশতাদের পড়ার সময় হবে তার আগের গুনাহ মাফ করে দেওয়া হবে। (সহিহ বুখারি, হাদিস-৪১২৩)।

সূরা ''ফাতিহার'' ফজিলত সম্পর্কে নবী কারিম (সাঃ) আরো বলেন, সূরা "ফাতিহা'' পবিত্র কোরয়ানের এক- তৃতীয়াংশ। (কানজুল উম্মাহ, হাদিস- ২৪৯৫)

সূরা ''ফাতিহা'' শিক্ষা

শরিয়তসম্মত রুকাইয়ার ক্ষেত্রে সূরা "ফাতিয়ার" উপকারিতা শীর্ষে। রাসূলে পাক (সাঃ) ইরশাদ করেছেন, সূরা "ফাতিহা'' মৃত্যু ছাড়া সকল রোগের মহৌষধ। (শুয়াবুন ঈমান, হাদিস- ২৩৭০, সুনামে দারেমি, হাদিস- ৩৪১৩) 

এছাড়াও সাহাবায়ে কেরামগণ, সূরা "ফাতিহার" মাধ্যমে ঝাড়ফুঁক করার কথা সহিহ সনদে হাদিসে বর্ণীত হয়েছে। (সহিহ বুখারী, হাদিস- ৪৬৪৫)

শেষকথা

প্রিয় পাঠক- পাঠিকা আশাকরি আমরা আপনাদের মাঝে ''সুরা ফাতিহার ফজিলত ও আমল'' সম্পর্কে অনেক তথ্য শেয়ার করতে পেরেছি। আর্টিকেলটি ভালোলাগলে শেয়ার করতে ভূলবেননা। মহাপবিত্র কোরয়ানের এই সূরাটি আমলের তালিকায় আমাদের রাখা উচিৎ। হে আল্লাহ আমাদের সকল মুসলিমকে এই সূরাটি আমলের তাওফিক দান করুন। আমিন। 

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url