আরও পড়ুনঃ চার কুল পাঠ করে ঘুমানোর ফজিলত

ইসলাম ধর্মের যে পাঁচটি স্তম্ভ রয়েছে তার মধ্যে সর্ব প্রথম স্তম্ভ হল কালেমা। প্রত্যেকটি মুসলমান নরনারীর কালেমা মৌখিক বলা ও আন্তরে গভিরভাবে বিশ্বাস করার নামই হলো ঈমান। কিন্তু আমাদের মধ্যে অনেকেই আছেন যারা শুদ্ধভাবে অথবা কালেমা জানেননা। তাই আমরা আজকের আর্টিকেলে আপনাদের মাঝে পাঁচ কালেমার অর্থসহ বাংলা উচ্চারণ এবং এর ফজিলত সম্পর্কে তুলে ধরেছি। যা আপনাদেক অনেক উপকারে আসবে। 

প্রত্যেকটি মুসলমানের চার কালেমা মৌখিক বলা ও আন্তরে গভিরভাবে বিশ্বাস করার নামই হলো ঈমান। যার মধ্যে ঈমান নাই তাকে কখনো প্রকৃত মুসলিম বলা যাবে না। ঈমানের অনেক শাখা প্রশাখা রয়েছে তার মধ্যে সর্ব প্রথম ও প্রধান শাখা হলো কালেমা। 

এই বিষয়ে হযরত আবু হোরায়রা (রস্য) থেকে বর্ণিত নবী করিম (সাঃ) বলেছেন, ঈমানের ৭০ টিরও বেশি বা ৭৩ টি শাখা প্রশাখা রয়েছে, তার মধ্যে প্রথম শাখা হলো কালেমা।

• কালেমা পাঠের ফজিলত 
• পাঁচ কালেমার অর্থসহ বাংলা উচ্চারণ এবং ফজিলত 
• কালেমা তাইয়্যেবার বাংলা উচ্চারণ
• কালেমা তাইয়্যেবার বাংলা অর্থ 
• কালেমা তাইয়্যেবার ফজিলত 
• কালেমা শাহাদাতের বাংলা উচ্চারণ
• কালেমা শাহাদাতের বাংলা অর্থ 
• কালেমা তাওহীদের বাংলা উচ্চারণ
• কালেমা তাওহীদের বাংলা অর্থ 
• কালেমা তাওহীদের বাংলা উচ্চারণ
• কালেমা তামজীদের বাংলা অর্থ 
• কালিমায়ে রদ্দে কুফরের বাংলা উচ্চারণ
• কালিমায়ে রদ্দে কুফরের বাংলা অর্থ
• শেষকথা 

কালেমা পাঠের ফজিলত 

নবী করিম (সাঃ) বলেছেন, যদি কোনো ব্যক্তি মৃত্যুর সময় কালেমা পাঠ করে মৃত্যুবরণ করে, তবে অবশ্যই ওই ব্যক্তি জান্নাতে প্রবেশ করবে। আর মুমিনদের কাছে কালেমার জিকির হল সর্বোত্তম জিকির।

হযরত আবু হুরায়রা (রাঃ) বর্ণনা করেছেন, মহানবী হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) বলেছেন, কোনো বান্দা ইখলাসের সাথে যদি কালেমা পাঠ করে, তাহলে তার জন্য আকাশের সব দরজাগুলো খুলে দেওয়া হয়। (তিরমিজি )

হযরত উবাদা ইবনে সামিত (রাঃ) বর্ণনা করেছেন, রাসূলে পাক (সাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি বেশি বেশি কালেমার জিকির করে সেই ব্যক্তির জন্য আল্লাহ তায়ালা পরকালে জাহান্নামের আগুনকে হারাম করে দিবেন এবং আকাশের সব রহমতের দরজা খুলে দিবেন। 

পাঁচ কালেমার অর্থসহ বাংলা উচ্চারণ এবং ফজিলত 

কালেমা তাইয়্যেবার বাংলা উচ্চারণ

লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মদুর রাসূলুল্লাহ 

কালেমা তাইয়্যেবার বাংলা অর্থ 

আল্লাহ ব্যতীত কোনো ইলাহ নাই এবং হযরত মুহাম্মদ (সাঃ) আল্লাহর প্রেরিত রাসূল এবং বান্দা। 

কালেমা তাইয়্যেবার ফজিলত 

কালেমা তায়্যিবাহ হল ইসলামের মৌলিক কাঠামো। যে কোনো বিধর্মীরা এই কালিমার মাধ্যমে ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত হয়ে থাকেন। যদি কোন ব্যক্তি শত বছরও কুফুরীতে মত্ত থাকে তবুও কালেমা পাঠের মাধ্যমে তার জীবনের সব গুনাহ ক্ষমা করে দেওয়া হবে।

আরও পড়ুনঃ নামাজের জন্য সহজ ও ছোট ৫টি সূরা

হযরত ইতবার বিন মালিক (রাঃ) হতে বর্ণিত, জনাবে রাসূলুল্লাহ (সাঃ) বলেছেন, যে ব্যক্তি একমাত্র আল্লাহ তায়ালাকে সন্তষ্ট করার জন্য “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহ" বলবে, কিয়ামতের দিন সে এমন ভাবে উপস্থিত হবেন যে, তার উপর জাহান্নাম হারাম হয়ে গেছে। (বুখারী মুসলিম, মুসনাদে আহমদ )

সকল মুসলমানের কাছে “লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসূলুল্লাহ “র মর্যাদা সীমাহীন। এটা এমন একটা বাক্য যা একজন মানুষকে তার অন্ধকার জীবণ থেকে আলোতে নিয়ে আসে। জীবনের আমূল পরিবর্তন সাধিত হয়। তবে এ বাক্যটি শুধু মুখে বললে হবে না, অন্তরে গভিরভাবে বিশ্বাস করতে হবে। 

সহীহ হাদিস শরীফে বলা হয়েছে, এই কালিমার নেকি  যদি এক পাল্লায় রাখা হয় অন্য পাল্লায় যদি আসমান জমিন রাখা হয় তাও  কালিমার পাল্লা ভারী হয়ে যাবে। 

হযরত আনাস (রাঃ) হতে বর্ণিত রাসূলে পাক (সাঃ)বলেছেন, কিয়ামতের দিন আল্লাহ তায়ালা বলবেন, হে মুহাম্মদ! সৃষ্টির মধ্য হতে আপনার উম্মতের মধ্যকার এমন ব্যক্তিকে জান্নাতে প্রবেশ করান যে ব্যক্তি একদিন হলেও ইখলাসের সঙ্গে এ সাক্ষ্য দিয়েছে যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নাই এবং সে দেয়া উপর মৃত্যু বরণ করেছে। (মুসনাদে আহমদ )

কালেমা শাহাদাতের বাংলা উচ্চারণ

আশ্‌হাদু আল-লা-ইলা-হা ইল্লাল্লা-হু ওয়াহ্‌দাহু-লা-শারীকালাহু ওয়া আশ্‌হাদু আন্না মুহাম্মাদান আ’বদুহু ওয়া রাসূলুহু।

কালেমা শাহাদাতের বাংলা অর্থ 

আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, আল্লাহ ছাড়া কোন উপাস্য নাই। তিনি এক, অদ্বিতীয় এবং আরও সাক্ষ্য দিচ্ছি যে, মুহাম্মাদ তার বান্দা ও প্রেরিত রাসুল।

কালেমা তাওহীদের বাংলা উচ্চারণ

সুবহানআল্লাহি ওয়াল হামদু লিল্লাহি ওয়ালা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াল্লাহু আকবার, ওয়ালা হাওলা ওয়ালা কুয়াতা ইল্লা বিল্লাহিল আলীইল আজিম।

কালেমা তাওহীদের বাংলা অর্থ 

মহিমান্বিত আল্লাহ, সমস্ত প্রশংসা আল্লাহর। আল্লাহ‌ ছাড়া কোন মাবুদ নাই। আল্লাহ মহান। সমস্ত পবিত্রতা আল্লাহর, সকল প্রশংসা আল্লাহর। আল্লাহ ছাড়া কোনো শক্তি নাই, কোনো ক্ষমতা নাই, তিনি সম্মানিত, তিনি মহান।

কালেমা তামজীদের বাংলা উচ্চারণ

লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু ওয়াহদাহু লা শারিকা লাহু, লাহুল মুলকু ওলাহুল হামদু উহয়ী ওয়া ইয়োমিতু ওয়া হুয়া হাইয়ুল লা ইয়ামুতু আবাদান আবাদা জুল জালালি ওয়াল ইকরাম বি ইয়াদিহিল খাইর ওয়া হুয়া আলা কুল্লি শাইয়িন কাদির

কালেমা তামজীদের বাংলা অর্থ 

আল্লাহ ব্যতীত কোন উপাস্য নেই, তিনি এক ও অদ্বিতীয়। তাঁর কোন অংশীদার নেই। সকল ক্ষমতা এবং প্রশংসা তাঁরই জন্য। তিনিই জীবন ও মৃত্যুর মালিক। তিনি চিরঞ্জীব, তিনি সকল সম্মানের মালিক। তাঁর হাতেই সকল মঙ্গল এবং তিনি সবকিছুর উপর ক্ষমতা রাখেন।

কালিমায়ে রদ্দে কুফরের বাংলা উচ্চারণ

আল্লাহুম্মাহ ইন্নী আউযুবিকা মিন্ আন্ উশ্রিকা বিকা শাইআওঁ ওয়া আনা আ’লামু বিহী, ওয়া আস্তাগ্ফিরুকা লিমা আ’লামু বিহী, ওয়ামা লা-আ’লামু বিহী, তুব্তু আন্হু ওয়া তাবাররা’তু মিনাল কুফরি ওয়াশ্ শিরকি ওয়াল মায়াছী কুল্লিহা, ওয়া আসলামতু ওয়া আমান্তু ওয়া আক্বুলু আল্লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রাসুলুল্লাহি।

কালিমায়ে রদ্দে কুফরের বাংলা অর্থ

হে আল্লাহ্! আমি তমার নিকট আকাঙ্ক্ষা করছি যে আমি যেন কাউকে তমার সাথে শরিক না করি। আমি আমার জ্ঞাত ও অজ্ঞাত পাপ হতে ক্ষমা প্রার্থনা করছি এবং তা হতে তওবা করছি। কুফরী, শিরক ও অন্যান্য সব পাপ হতে দূরে থাকছি। এবং স্বীকার করছি যে, “আল্লাহ এক আর কোন মাবুদ নেই। হযরত মুহাম্মদ (সঃ) আল্লাহর প্রেরিত রাসূল।

আরও পড়ুনঃ সুরা ইখলাস পাঠের বৈশিষ্ট্য সমূহ

শেষকথা

হে আল্লাহ আপনি আমাদের প্রত্যেক মুসলিম উম্মাহকে যথাযথভাবে কালেমা মৌখিক বলা ও আন্তরে গভিরভাবে বিশ্বাস স্থাপনের তাওফিক দান করুন। আমাদের কালেমা পাঠ করে দুনিয়া ও পরকালের শান্তি ও রহমত লাভের তাওফিক দান করুন। এছাড়াও হাদিসের ওপর আমল করার তাওফিক দান করুন। আমিন।