বাইনান্স একাউন্ট কিভাবে খোলা যায়?

আরো পড়ুনঃ বিটকয়েন কি? | কিভাবে কাজ করে বিটকয়েন?

অনলাইনে জগতে বাইনান্স একাউন্ট একটি গুরুত্বপূর্ণ পার্ট। কারণ বিটকয়েন থেকে শুরু করে সকল জটিল কাজ করার জন্য ব্যবহার করা হয় বাইনান্স একাউন্ট। আর অনেকে আছেন যারা গুরুত্বপূর্ণ এই একাউন্ট সম্পর্কে অনলাইনে জানতে চান।

আর আপনিও কি বাইনান্স একাউন্ট সম্পর্কে জানতে চান? তাহলে আজকের এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য অনেক গুরুত্বপূর্ণ। তাই এই আর্টিকেলটি আপনি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত পুরোটাই মনোযোগের সঙ্গে পড়ুন।

কারণ আজকের আর্টিকেলে আমরা আপনাদের সঙ্গে শেয়ার করবো বাইনান্স কি?, কিভাবে কাজ করে? এই একাউন্ট খোলার নিয়ম ইত্যাদি সম্পর্কে বিস্তারিত সকল তথ্য। তাহলে চলুন দেখে নেওয়া যাক, বাইনান্স সম্পর্কে গুরুত্বপূর্ণ তথ্যগুলো-

বাইনান্স কি?

বাইনান্স হলো একটি ক্রিপ্টোকারেন্সি এক্সচেঞ্জ। আর ক্রিপ্টোকারেন্সি বলতে বোঝায়, যেখানে লেনদেন করা যায় ক্রিপ্টোকারেন্সি বা ক্রয় বিক্রয় করা যায় ক্রিপ্টোকারেন্সি। তাহলে আমরা কেন ব্যবহার করবো বাইনান্স? 

অনলাইনে লোকাল কিছু ওয়েবসাইট রয়েছে, যেখানে ক্রয় বিক্রয় করা যায় ক্রিপ্টোকারেন্সি, সেগুলোতে বেশ কিছু সমস্যা রয়েছে। যেমন ক্রিপ্টোকারেন্সির দামের সমস্যা এবং বিশবস্ততা। সবচেয়ে বড় কথা হলো ওটি কোন ট্রেডিং এর আওতায় পড়ে না।

কিন্তু বাইনান্স আপনাকে দেয়, সবচেয়ে সেরা অভিজ্ঞতা ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেড করার ক্ষেত্রে। তবে বর্তমানে বাইনান্স ছাড়াও আরো বেশ কিছু এক্সচেঞ্জ রয়েছে যার মাধ্যমে ট্রেড করা যায়।

বাইনান্স একাউন্ট কি?

বাইনান্স হলো সারা বিশ্বের অন্যতম একটি জনপ্রিয় ক্রিপ্টোকারেন্সি এক্সচেঞ্জ করার প্ল্যাটফর্ম। বাইনান্স একাউন্ট বিভিন্নভাবে অনলাইনে কাজের জন্য সহযোগীতা করে। যেমন, এটি ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেডিং, স্টেকিং, কেনা- বেভা কিংবা বিভিন্ন ধরণে আর্থিক সেবায় সাহায্য করে।

বাইনান্স প্রতিষ্ঠা করেন ২০১৭ সালে চাপেং ঝাও এবং বর্তমান সময়ে এটি বেশ পরিচিত, বিশ্বের বৃহত্তম ক্রিপ্টোকারন্সি এক্সচেঞ্জ হিসাবে। এটি বিশেষভাবে এত জনপ্রিয় হওয়ার কারণ এর সহজ ব্যবহার, লেনদেন দ্রুত এবং নিরাপদ একটি প্ল্যাটফর্ম।

কিভাবে কাজ করে বাইনান্স?

বাইনান্স মূলত অফার করে ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেডিং জোড়া (যেমন BTC/USDT/BUSD/ETH)  ব্যবহার কারীরা পছন্দ অনুযায়ী তাঁদের নিজেদের লেনদেন নিজেরা করতে পারেন। এটি ট্রেডিং ছাড়াও আরো বেশকিছু সেবা দেয়, যেমন ডিপোজিট, স্টেকিং, লোনিং, উইথড্রল এবং ডেরিভেটিভস ইত্যাদি।

বাইনান্স একাউন্ট এর কাজ কি?

বাইনান্স একাউন্টের মাধ্যমে ইনলাইনের অনেক গুরুত্বপূর্ণ বিভিন্ন কাজ সম্পাদন করা হয়ে থাকে। নিম্নে বাইনান্স একাউন্টের গুরুত্বপূর্ণ কাজ সম্পর্কে আলোচনা করা হলো-

  • প্রতিটি অনলাইনের লেনদেনের জন্য অল্প কিছু ট্রেডিং ফি কর্তন করা হয়, যা বিভিন্ন সময়ে পরিস্থিতি অনুযায়ী কমানো যেতে পারে।
  • বাইনান্স একাউন্ট ব্যবহারকারিরা চাইলে মার্কেট, লিমিটড কিংবা স্টপ লস অর্ডার করার মাধ্যমে তারা ক্রয় ও বিক্রয় করতে পারেন ক্রিপ্টোকারেন্সি।
  • বাইনান্স একাউন্ট এর মাধ্যমে বিভিন্ন ধরণের অনলাইনে পেমেন্ট মেথড যেমন ডেবিট/ ক্রেডিট কার্ড, ব্যাংক ট্রান্সফার এবং অন্য ক্রিপ্টোকারেন্সিতে তহবিল জমা করা যায়।

বাইনান্স একাউন্ট খুলতে কি প্রয়োজন?

বাইনান্স একাউন্ট খোলা একেবারেই সহজ। শুধুমাত্র তাঁদের দেওয়া কয়েকটি ধাপ অনুসরণ করে এগুলেই চলবে। আর এই একাউন্ট খুলতে যে সকল ডকুমেন্ট প্রয়োজন তা নিম্নে দেখে নেওয়া যাক- 

  • নেটসহ মোবাইল বা কম্পিউটার।
  • একটি সচল মোবাইল নম্বার ও ইমেইল আইডি।
  • আপনার জাতীয় পরিচয় পত্র বা আপনার স্মার্ট কার্ড।
উপরের তিনটি ডকুমেন্ট যদি আপনার সঠিক থাকে, তাহলে আপনি খুব সহজে একটি বাইনান্স একাউন্ট খুলতে পারবেন।

বাইনান্স একাউন্ট কিভাবে খোলা যায়?

বাইনান্স একটি গুরুত্বপূর্ণ এবং জনপ্রিয় একাউন্ট। এই একাউন্ট খোলা অনেকটাই সহজ কিন্তু অনুসরণ করতে হয় কয়েকটি ধাপ। চলুন তাহলে নিম্নের আলোচনায় দেখে নেওয়া যাক, বাইনান্স একাউন্ট কিভাবে খোলা যায়- 

  • প্রথমে আপনার মোবাইলে বা কম্পিউটারে Binance বা Binence.com অ্যাপটি ডাউন লোড করুন এবং এই অ্যাপ এ প্রবেশ করুন।
  • এবার আপনার ব্যবহৃত মোবাইল নম্বার বা একটি ইমেইল আইডি দিয়ে রেজিস্ট্রেশন করুন এবং মজবুত একটি পাসওয়ার্ড দিন।
  • আপনার নিজের জাতীয় পরিচয়পত্র বা পাসপোরট এবং ভেরিফিকেশন করুন আপনার ছবি দিয়ে DYC এর মাধ্যমে।
  • ভেরিফিকেশন করা সম্পূর্ণ হয়ে গেলে ডিপোজিট করুন ফান্ড এবং শুরু করতে পারেন ট্রেডিং এবং অন্যান্য কাজ।

বাইনান্স ট্রেডিং কি? 

ক্রিপ্টোকারেন্সির জগতে বাইনান্স এর নাম শুনেন নাই, এমন মানুষ আছে বলে মনে হয় না। ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্রেড করেছেন অথচ কেউ বাইনান্স একাউন্ট খোলেন নি এমন মানুষও খুজে পাওয়া কস্টকর হয়ে দাঁড়াবে।

কিন্তু নতুন অনেকে আছেন যারা বাইনান্স একাউন্টের নাম শুনেছেন কিন্তু কোনা কারণে এই একাউন্ট খোলা হয়নি বা একাউন্ট খোলার নিয়ম জানেন না, আবার বাইনান্স ট্রেডিং কিভাবে করতে হয়, সে সম্পর্কে সঠিক ধারনা অনেক কম। আজকের আর্টিকেলটি তাঁদের জন্য যারা, এই সম্পর্কে জানতে চান।

বাইনান্স একাউন্ট এত জনপ্রিয় কেন?

বাইনান্স তাঁদের যাত্রা শুরু করে ২০১৭ সালে এবং বর্তমানে বিশ্বের প্রথম সারিতে অবস্থান করছে এবং এটি এখন সবচেয়ে বেশি মানুষ ব্যবহার করছে। বাইনান্স একাউন্ট জনপ্রিয় কেন? কারণ বাইনান্স তাঁদের এক্সচেঞ্জ কাঠামো করেছে সহজ, যার কারণে এই এক্সচেঞ্জটি নতুন থেকে অভিজ্ঞ সবার কাছেই প্রিয় এক্সচেঞ্জ।

মূলকথা হলো একজন নতুন ব্যবহারকারিও বাইনান্স এক্সচেঞ্জ বা একাউন্ট খোলা থেকে শুরু করে খুব সহজেই ব্যবহার করতে পারবেন। আপনি নতুন হলেও আপনাকে কারো কাছে, পরিচালনার জন্য জানতে হবে না।

এছাড়াও বাইনান্স এক্সচেঞ্জ ট্রেডিং ফি সহজ এবং লিকুইডিটি অনেক বেশি। আর লিকুইডিটি মানে ক্রিপ্টোকারেন্সি, যা আপনার ইচ্ছেমত মার্কেট দাম অনুযায়ী বিক্রি করতে পারবেন। কারণ, যেহেতু এটি ব্যবহারকারি বেশি, তাই এর লিকুইডিটিও অনেক বেশি। এর এই সকল কারণেরই, এটি এত জনপ্রিয়।

বাংলাদেশে কি বাইনান্স বৈধ?

ক্রিপ্টোকারন্সি বা বাইনান্স বাংলাদেশে লেনদেন সম্পূর্ণ বৈধ নয়। কারণ বাংলাদেশ ব্যাংক বাইনান্স বা ক্রিপ্টোকারন্সি ট্রেডিংকে সমর্থন করেনা, তাই এটিকে বাংলাদেশে অবৈধ বলে ঘোসণা করা হয়েছে। তবে, ক্রিপ্টোকারন্সি বা বাইনান্স এ হোল্ডিং বা মওজুদকে নিষিদ্ধ করা হয়নি।

তবে আন্তর্জাতিক ক্রিপ্টোকারন্সি এক্সচেঞ্জে বা বাইনান্সে অনেক ব্যবহারকারি আছেন জারা ব্যাক্তিগতভাবে কিছু বিনিয়োগ করেন, যা বাংলাদেশে এখনো ধূসর এলাকায় পড়ে।

বাংলাদেশে কি বিটকয়েন বৈধ?

বাংলাদেশের আইন অনুযায়ী বিটকয়েন বৈধ নয়। এটিকে সমর্থন করে না বাংলাদেশ ব্যাংক এবং বিটকয়েনসহ সকল প্রকার ক্রিপ্টোকারন্সিকে মানিলন্ডারিং এর সাথে সংযুক্ত থাকার সম্ভাবনা রয়েছে বলে সতর্ক করেছে। ফলে বিটকয়েন কেনা বেচাকে বাংলাদেশে অবৈধ বলে মনে করা হয়।

বাইনান্স কি হালাল ইসলামিকভাবে?

বাইনান্স বা যে কোন প্রকারের ক্রিপ্টোকারন্সি এক্সচেঞ্জে ট্রেডিং ইসলামিকভাবে হালাল কিনা, সেই বিসয়ে ইসলামিক ফাইনান্স বিশেষজ্ঞদের মধ্যে কিছু বিতর্ক রয়েছে। যদি সাধারণ ক্রিপ্টোকারন্সি ট্রেডিং নির্ভরশীল হয় সম্পদের উপর এবং সংযোগ না থাকে সুদের।

তাহলে, হালাল হিসাবে অনেকে মনে করে থাকেন। তবে, যদি ফিউচারস ট্রেডিং বা লিভারেজ বা সুদ যুক্ত থাকে, সেটিকে ইসলামিক দৃষ্টিতে সাধারণভাবে বিবেচনা করা হয়ে থাকে হারাম হিসাবে।

বাইনান্স একাউন্টের কাজ কি? শেষকথা

আপনি চাইলে উপরের একাউন্ট খোলার ধাপগুলো অনুসরণ করে, একটি নতুন একাউন্ট খোলার মাধ্যনে বিশ্বের বৃহত্তম ক্রিপ্টোকারেন্সিতে বিনিয়োগ করতে পারবেন এবং ট্রেডিং করা শুরু করতে পারবেন।

পাঠক পাঠিকাগণ আমরা আশাকরি, আপনারা যদি আজকের এই গুরুত্বপূর্ণ আর্টিকেলটি শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত মনোযোগের পড়ে থাকেন, তাহলে নিশ্চয়ই জেনে গেছেন ''বাইনান্স কি? ও বাইনান্স একাউন্ট কিভাবে খোলা যায়?'' সহ বাইনান্সের অনেক তথ্য।

আরো পড়ুনঃ হোয়াটসঅ্যাপে মুছে যাওয়া ম্যাসেজ ফিরে পাওয়ার উপায়

আশাকরি আর্টিকেলটি আপনাদের অনেক উপকারে আসবে। আর যদি আর্টিকেলটি আপনাদের ভালো লাগে ও উপকারে আশে তবে, অবশ্যই এটি অন্যের সঙ্গে শেয়ার করতে ভূলবেন না। আরো নতুন নতুন তথ্য জানার জন্য আমাদের পরবর্তী আর্টিকেলটি পড়ুন এবং আমাদের সঙ্গে থাকুন। ধন্যবাদ।

এই পোস্টটি পরিচিতদের সাথে শেয়ার করুন

পূর্বের পোস্ট দেখুন পরবর্তী পোস্ট দেখুন
এই পোস্টে এখনো কেউ মন্তব্য করে নি
মন্তব্য করতে এখানে ক্লিক করুন

এই ওয়েবসাইটের নীতিমালা মেনে কমেন্ট করুন। প্রতিটি কমেন্ট রিভিউ করা হয়।

comment url
Md. Abir Hossain
Md. Abir Hossain
একজন ডিজিটাল মার্কেটিং এক্সপার্ট ও অর্ডিনারি আইটির সিনিয়র সাপোর্ট ইঞ্জিনিয়ার। তিনি অনলাইন ইনকাম, ব্লগিং, SEO ও টেকনোলজি নিয়ে নিয়মিত লেখালেখি করেন। ৫ বছরের অভিজ্ঞতায় তিনি শিক্ষার্থীদের অনলাইনে সফল হতে সহায়তা করে যাচ্ছেন।